শরীয়তপুরে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত

নিউজটি শেয়ার করুন

শরীয়তপুর প্রতিবেদক: শরীয়তপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান বলেছেন, আমরা স্বাধীনতার ৫২-৫৩ বছর পরে এখন শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাদের তুষ্ট করতে চাই না। আমরা প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে চাই। আমরা সেই জায়গায় এখন আছি। জনগণের সেবা করা সরকারি কর্মচারীদের সাংবিধানিক দায়িত্ব। এবং আপনারা জানেন, পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেসির যে সম্পর্ক এই সম্পর্কটি অবিচ্ছেদ এবং একক এবং একে অপরের পরিপুরক। মানুষের ন্যায় বিচার প্রাপ্তির যে আশা সেটি চিরদিনের সর্ব জনীন। দীর্ঘ বিলম্বে প্রাপ্ত বিচারকে আমরা কখনই বলি না-যে এটা ন্যায় বিচার হয়েছে।

গত শনিবার ১২ আগষ্ট সকাল ১০ টায় শরীয়তপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শরীয়তপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান একথা বলেন। তিনি আরোও বলেন, বাংলাদেশ সংবিধানের ৩৫ এর ০৩ সংবিধানে বলেছে, ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা হবে প্রকাশ্য আদালতে এবং দ্রুততার সাথে। আমাদের বিলম্ব বিচার এর সুযোগ নাই। এখন আমাদেরকে দ্রুত বিচার করতে হবে। দ্রুত বিচারের মধ্যেই, আমাদের ন্যায় বিচারের বীজ লুকিয়ে আছে। সুতরাং আমাদের মেডিকেল রিপোর্ট বলুন, পিএম রিপোর্ট বলুন, আরো যে রিপোর্ট গুলো আছে সেগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে যদি না দিতে পারি তা-হলে তো ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা সম্ভাব নয়,বিচার বিলম্বিতই হবে। আজকের মিটিংএ যারা আছেন, প্রত্যেকেই যার যার জায়গা থেকে ভুমিকা রাখবেন। তিনি সবার উদ্যেশে বলেন,বিচার যে শুধু বিচারকরা করেন বা বিসিএস ক্যাডারের লোকরা বা জুডিশিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশনের লোকরাই করে তা কিন্তু নয়। বিচার এক অর্থে বা বৃহত্তর অর্থে দেখলে বিচারক আমরা কিন্তু সবাই। কিভাবে? আপনি দিন শেষে যখন বাসায় ফিরছেন সন্ধ্যা বেলা। আপনার দুটো সন্তান দুপুর বেলা মারামারি করেছে। আপনার কাছে বিচার দিচ্ছে, বাবা আমার বোন এমন করেছে। আপনি সেখানেও একটা বিচার করছেন। আপনি ক্লাবের কর্মকর্তা, আপনি একটা রাজনৈতিক দলের কর্মকর্তা সেখানেও কিন্তু আপনার, সালিশ বিচার করতে হচ্ছে।

তদন্ত করা, বিচার করা শুধুমাত্র করলেই হবে না। এটা দেখাতেও হবে সে সঠিক ভাবে করছে। অর্থাৎ মানুষের আস্থার জায়গাটা, বিশ্বাসের জায়গাটা, আমরা যদি প্রতিষ্ঠা না করতে পারি। তা-হলে কিন্তু আমরা ন্যায় বিচার করতে পারবো না। আমাদের সংবিধানের ২ এর ২১ অনুচ্ছেদে বলেছে যে, সরকারি কর্মচারীদের দায়িত্ব হচ্ছে,সকল সময় জনগণের সেবা করার চেষ্টা করা। সুতরাং জনগণের সেবা করা আপনার একটা সাংবিধানিক দায়িত্ব। জনগণের সেবা করাটা শুধু আমরা শ্লোগান হিসাবে না দেখি। শুধু একটা ম্যানুফেসটরি হিসাবে না দেখি। এটা আপনার সাংবিধানিক দায়িত্ব।

আমাদের সাবাইকে দেশ প্রেমিক হতে হবে। আমরা এখানে যারা উপস্থিত আছি। আসুন আমরা সবাই মিলে আমাদের সম্মেলিত প্রচেষ্টায়। এখানে পুলিশ বিভাগ, বিচার বিভাগ স্বাস্থ্য বিভাগ আরো অন্যান্য সবাই মিলে আমরা মজবুদ গড়ে তুলি। আমাদের বিচার বিভাগ রাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। যা আমাদের সুখ্যাতির স্মারক হিসাবে চীর ভাষ্কর হয়ে থাকবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। আজকের এই মিটিং এর ফল নিশ্চয় সুদূর প্রসারিত হবে। সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন।

অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন চীফ জুডিশিয়াল মোঃ সালেহুজ্জামান। তিনি এসময় পুলিশকে কিছু আইনি নির্দেশনা দেন। এর মধ্যে যে সকল মামলা চাঞ্চল্যকর এবং সেনসিটিভ সেই সব মামলা দ্রুত তদন্ত কাজ সম্পর্ন করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করার কথা বলেন। তাহলেই আদালত মানুষের মাঝে দ্রুত বিচারের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিনিয়র সহকারী জজ হেদায়েত উল্লাহ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ সুপার মাহবুবুল আলম সহ পুলিশের সকল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি), জেলা ম্যাজিস্ট্রেটির প্রতিনিধি জেল কারাগার,স্বাস্থ্য বিভাগ প্রমুখ।

শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »