বড় কোম্পানিগুলোর ব্যালেন্স শিটে টাকা থাকলেও বাস্তবে নেই


আজকালের কণ্ঠ প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ৭, ২০২৪, ২:৪৭ অপরাহ্ন /
বড় কোম্পানিগুলোর ব্যালেন্স শিটে টাকা থাকলেও বাস্তবে নেই

আজকালের কন্ঠ ডেস্ক : বেক্সিমকোসহ বড় বড় কোম্পানিগুলোর ব্যালেন্স শিটে টাকা থাকলেও বাস্তবে দেশে টাকা নেই। সব টাকা দেশের বাইরে চলে গেছে। ব্যাংকে জনগণ টাকা রেখেছে। কিন্তু ব্যাংকের টাকা দেশে নেই। কিন্তু এই টাকা তো জনগণের। সম্পদের অভাবে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বোশি বরাদ্দ দেওেয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ।

তিনি বলেন, বৈষম্য কমাতে হলে সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন।তিনি আরও বলেন, আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে আগামী বছর আমরা রাজনৈতিকভাবে নির্বাচিত সরকার হয়তো দেখবো। তখন দেশকে উন্নতির দিকে নিয়ে যাওয়া যাবে।আজ শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক আন্তর্জাতিক গবেষণা সন্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রাজধানীর একটি হোটেলে চারদিনের এই সন্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন। এ সময় গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন বিশ্বব্যাংকের চিফ ইকোনমিস্ট ইন্ডারমিট এস গিল। এ সময় তিনি ‘দ্য মিডল ইনকাম ট্রাপ’ শীর্ষক একটি গবেষণা পত্র তুলে ধরেন।

ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ আরও বলেন, আমরা স্বল্পকালীন সময়ের জন্য এসেছি। তাই সব কিছু করা সম্ভভ হবে না। আমরা এখন সম্পদের সংকটে আছি। ফলে বিভিন্ন খাতে কাঙ্ক্ষিত বরাদ্দ নিশ্চিত করতে পারছি না। কিন্তু আমাদের দেশে বৈষম্য দূর করতে হলে গরীব মানুষদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। তেমনি ধনীদের কাছ থেকে কর আদায় বাড়াতে কর নীতিমালায় সংস্কার আনতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণ করবো। কেউ বলছে, এলডিসি থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। আবার কেই বলছেন এখনই নয়। কিন্তু আমি এক সময় জাতিসংঘের এই কমিটিতে ছিলাম বলে বিষয়টি জানিয়ে আমরা যে অবস্থায় আছি এতে এলডিসি উত্তরণের বিকল্প নেই। তবে আমরা যেটি করতে পারি সেটি হলো এলডিসি থেকে বেরিয়ে গেলেও উন্নত দেশগুলোকে বলতে পারি আমরাদেও সক্ষমতা এখনো বাড়েনি।

আমাদের মতো অবস্থা থেকে যাত্রা শুরু করে ভিয়েতনাম আজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। তারা ৩০/৪০টি দেশের সঙ্গে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট করেছে। আমাদের এখনো একটি দেশের সঙ্গেও এই এগ্রিমেন্ট হয়নি। আন্তর্জাতিকভাবে যুক্ত হতে না পারলে আমরা টেকসই উন্নয়ন করতে পারবো না।

তিনি আরও বলেন, বৈষম্য দূর করতে হলে আমাদের মানব সম্পদকে দক্ষ করতে হবে। এদেশের কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৮০ শতাংশ শিক্ষক নেই। আবার সাধারণ শিক্ষায় জেলায় জেলায় এমনকি উপজেলা পর্যায়েও বড় বড় অবকাঠামো হয়েছে। আমি জানি না কবে কারিগরি শিক্ষার সয়ংকট কাটবে।

তিনি বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার। এ খাতে বরাদ্দ দিলে সেটি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে। তবে বলা হয়, বড় বড় হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ বানাতে হবে, ডায়ালাইসি মেশিন কিনতে হবে। কিন্তু দেখা যায়, দক্ষ অপারেটরের অভাবে এসব যন্ত্রপাতি থাকলেও তা পড়ে থাকে। এখানে এক ধরনের ডিলেমা আছে।

বিনায়ক সেন জানান, চারদিনে বিভিন্ন অধিবেশনে প্রায় ৩০টি গবেষণাপত্র এবং ১২টি পাবলিক লেকচার অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনের মধ্যদিয়ে বৈষম্যবিরোধী মনোভাব আরও বড় হিসেবে তৈরি হয়েছে। সেই স্প্রিটকে সামনে রেখে বৈষম্য দূর করতে সম্পদেরও সুষম বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে।

উচ্চ আয়ের দেশের তুলনায় একটি মধ্যম আয়ের দেশে মন্দার সম্ভাবনা তিনগুন বেশি থাকে। মধ্য আয়ের দেশে এমনিতেই পুঁজি কম থাকে। আবার যা থাকে সেটিরও ব্যবহার হয় কম। এই মধ্য আয়ের ফাঁদ বৈষম্য তৈরি করে। মধ্য আয়ের দেশগুলো নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার কম করে। অপরদিকে জীবাষ্ম জ্বালানির ব্যবহার বেশি হয়। ফলে এসব দেশে কার্যন নিঃসরণের মাত্রা বেশি থাকে। এসব দেশে গবেষণা কম হয়। ফলে অর্থনীতিতে সৃজনশীলতা কম থাকে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা জরুরি।