গৌরনদীতে শিশু সাফওয়ান হত্যা, আটক – ২


আজকালের কণ্ঠ প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ১৭, ২০২৫, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন /
গৌরনদীতে শিশু সাফওয়ান হত্যা, আটক – ২

গৌরনদী প্রতিনিধি,এ,এস,মামুন : নিখোঁজের ১৬ ঘন্টা পর বরিশালের গৌরনদীতে রাস্তার ঢাল থেকে সাফওয়ান শিকদার (৫) নামে এক শিশু’র লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ভোর সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার শরিকল ইউনিয়নের মধ্য হোসনাবাদ গ্রামের মান্না বেপারীর বাড়ির কাছে রাস্তার ঢাল থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ দুইজনকে আটক করেছে। উত্তেজিত এলাকাবাসী আটককৃতদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে। শিশু সাফওয়ান উপজেলার মধ্য হোসনাবাদ গ্রামের মো. ইমরান শিকদারের ছেলে।

সাফওয়ানের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, ঢাকা থেকে বাবা মার সাথে শিশু সাফওয়ান গত ১ জানুয়ারি উপজেলার মধ্য হোসনাবাদ গ্রামের দাদা বাড়ি বেড়াতে আসে। শিশু সাফওয়ান (৫) গত বুধবার দুপুর ২টার দিকে স্থানীয় শিশুদের সঙ্গে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরবর্তীতে অনেক খোঁজাখুঁজি করে স্বজনরা শিশুটির সন্ধান না পেয়ে শিশুর দাদা বারেক শিকদার ওইদিন বিকালে গৌরনদীর শরিকল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন। স্থানীয় এক নারী বৃহস্পতিবার ভোর ৬টার দিাকে একই গ্রামের মান্না বেপারীর বাড়ির কাছে রাস্তার ঢালে শিশু সাফওয়ানের লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে শরিকল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের একদল পুলিশ ভোর সাড়ে ৬টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাফওয়ানের লাশ উদ্ধার করে। সাফওয়ান হত্যার রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের শনাক্ত করে অবিলম্বে তাদের গ্রেফতারের দাবি জানান স্বজনরা।
গৌরনদী থানার ওসি মো. ইউনুস মিয়া জানান, নিহত শিশুর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বৃহস্পতিবার সকালে বরিশাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে একই বাড়ির লোকমান চৌধুরীর বসত ঘরে তল্লাশী চালিয়ে হত্যার বেশকিছু আলামত জব্দ করেছে পুলিশ। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য লোকমান চৌধুরীর ছেলে রুমান চৌধুরী ও শরিকল ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য মোজাম্মেল হক চৌধুরীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

নিহত শিশুর দাদা বারেক সিকদার বলেন, প্রতিবেশি লোকমান চৌধুরীর সাথে জমির সীমানা নিয়ে তার দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। বুধবার দুপুরে লোকমানের ছেলে রুমানকে আমার নাতির সাথে কথা বলথে দেখেছে স্থানীয়রা।

আটককৃত ইউপি সদস্য মোজাম্মেল বলেন, বিনাকারণে আমাকে এলাকার কতিপয় ব্যক্তি মারধর করে গুরুতর আহত করেছে। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ শিশু সাফওয়ান হত্যাকান্ডের সাথে ইউপি সদস্যর সরাসরি যোগ সূত্রের আলামত রয়েছে।

এদিকে শিশুটির মরদেহ পাওয়ার খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শিশু সাফওয়ানের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধারের পর থেকে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। আটককৃত ইউপি সদস্যকে সেনা ও র‌্যাবের সহায়তায় থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এলাকাবাসী হত্যাকারীদের গ্রেফতারপূর্বক ফাঁসির দাবিতে দফায় দফায় বিক্ষোভ করেছেন।