নিষেধাজ্ঞ শেষ, কাঁকড়া আহরনে জেলেরা ছুটছে সুন্দরবনে’


আজকালের কণ্ঠ প্রকাশের সময় : মার্চ ২, ২০২৪, ১:১৪ অপরাহ্ন /
নিষেধাজ্ঞ শেষ, কাঁকড়া আহরনে জেলেরা ছুটছে সুন্দরবনে’

মোংলা প্রতিনিধি : দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে শুক্রবার ( ১লা মার্চ) থেকে সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণ শুরু হয়েছে। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে বনে যাচ্ছেন মোংলাসহ বাগেরহাট ,খুলনা ও সাতক্ষীরা উপকূলীয় অ লের জেলেরা। বন অফিস থেকে অনুমতি নিয়ে তারা বনে প্রবেশ করছেন।

বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনের ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশ অংশে জলভাগের পরিমাণ ১ হাজার ৮৭৪ দশমিক ১ বর্গকিলোমিটার, যা পুরো সুন্দরবনের আয়তনের ৩১ দশমিক ১৫ শতাংশ। জলভাগে ছোট-বড় মিলিয়ে ৪৫০টি নদ-নদী ও খাল আছে। এসব খালে ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া রয়েছে। জানুয়ারি ও ফেব্রæয়ারী দুই মাস কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম হওয়ায় ৫৯ দিনের জন্য জেলেদের সুন্দরবনে প্রবেশ করে কাঁকড়া ধরার অনুমতি বন্ধ রাখে বন বিভাগ।

করমজল বন্যপ্রাণী ও ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির জানান, সুন্দরবনের মধ্যে অভয়ারণ্য ঘোষিত ৩০টি খাল এবং ২৫ ফুটের কম প্রশস্ত খালে সারা বছরই কাঁকড়া ধরা নিষিদ্ধ থাকে। বাকি অংশের নদী ও খালে বৈধ পাস-পারমিটধারী প্রায় ১৫ হাজার জেলে শুধু কাঁকড়া আহরণ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করেন।

১৯৯৮ সালে কাঁকড়া রপ্তানি নীতিমালা প্রণয়নের পর থেকেই প্রতিবছর দুই মাস কাঁকড়া ধরার পাসপারমিট বন্ধ রাখা হয়।
মোংলা চিলা বাজারের জেলে সরদার বেলায়ের হোসেন বলেন, ‘আর্থিকভাবে সচ্ছল কোনো লোক সুন্দরবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঁকড়া ধরতে যান না। যাঁরা যান, তাঁরা প্রায় সবাই দরিদ্র। দুই মাস নিষেধাজ্ঞা চলাকালে দরিদ্র জেলেদের চরম দুর্দিন গেছে। বন্ধের দিনগুলোয় সরকারি কোনো ভাতার ব্যবস্থা না থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়েছে।

হারুন মোল্লা নামের এক জেলে জানান, তার সংসারে সাত জন লোক। সুন্দরবনে একদিন না গেলে তার চুলা জ্বলে না। দুই মাসের কাঁকড়া আহরন বন্ধে দিনমজুরি করে কোনোমতে সংসার চালিয়েছেন। মহজানের কাছ থেকেও ধার নিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।

জেলেদের অভিযোগ, বনবিভাগ যে উদ্দেশ্যে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলো তা সফল হয়নি। কারণ, নিেেষধাজ্ঞার মধ্যেও গোপনে কাঁকড়া আহরন হয়েছে।

খুলনা অ লের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, কাঁকড়া বৃদ্ধির লক্ষ্যে সুন্দরবনে বিভিন্ন নদী-খালে দুই মাস জেলেদের কাঁকড়া আহরণ নিষিদ্ধ ছিল। ১ মার্চ থেকে বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে জেলেরা প্রবেশনিষিদ্ধ অভয়াশ্রম ছাড়া অন্য নদী-খালে কাঁকড়া আহরণ করতে পারবেন। তবে কেউ যাতে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরার অনুমতি নিয়ে বেআইনি কর্মকাণ্ডে জড়িত হতে না পারে, সে জন্য বনরক্ষীদের টহল ও অন্যান্য কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।