কলাপাড়া প্রতিনিধি : আন্ধারমানিক কমিউনিটি পত্রিকা। এ পত্রিকার সম্পাদক একজন দিন মজুর। আর এ পত্রিকার ১৬ জন রিপোর্টার রয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ ইলেট্রিশিয়ান, কেউ গৃহিনী আবার কেউ মৎস্যজীবি। তারা সবাই জীবিকার পাশাপাশি কাজের ফাঁকে ফাঁকে লিখেন নিজের এবং হতদরিদ্র মানুষের অসহায়ত্বের গল্প। দীর্ঘ ৭ বছর ধরে এ পত্রিকায় লিখে আসছেন তারা। আর ৭ বছর ধরে ২ মাস অন্তর অন্তর ব্যক্তিগত খরচে এ পত্রিকাটি প্রকাশ করছেন দিন মজুর সম্পাদক হাসান পারভেজ। ইতিমধ্যে এ পত্রিকাটির জনপ্রিয়তা বেড়েছে বহুগুনে। তবে সরকারী সহায়তা পেলে সাপ্তাহিক হিসেবে পত্রিকাটি বের করতে চান সম্পাদক।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাতলা গ্রামের বাসিন্দা হাসান পারভেজ। ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল হওয়ায় তাদের গ্রামে গিয়ে পৌছায় না কোন জাতীয় বা আঞ্চলিক পত্রিকা। তাই খেটে খাওয়া সাধারন মানুষের সু:খ-দু:খের গল্প তুলে ধরতে হাতে লিখে বের করেন ‘আন্ধারমানি’ নামের একটি কমিউনিটি পত্রিকা। ২০১৯ সালের ১ মে এ পত্রিকার যাত্রা শুরু হয়। পত্রিকাটি দীর্ঘ ৭ বছর ধরে প্রকাশিত হওয়ায় পাঠক বেড়েছে অনেক। তারা পত্রিকাটি সাপ্তাহিক হিসেবে বের করা অনুরোধ জানিয়েছেন।
পশ্চিম সোনাতলা গ্রামের ষাটোর্ধ্ব আব্দুর রব মিয়া বলেন, বয়সের ভারে এখন আর কোন কাজকর্ম করতে পারিনা। তাই বাড়িতে থাকা পরে। মোবাইল ইন্টারনেট সম্পর্কেও তেমন ধারনা নেই। তাই মাঝে মাঝে পত্রিকা পড়ি। বেশ ভালই লাগে। তবে তাকে প্রতি সপ্তাহে পত্রিকা দিতে বলেছি সম্ভবত আর্থিক সমস্যার কারনে সে দিতে পারছে না।
একই এলাকার সত্তরোর্ধ্ব জসিম হোসেন বলেন, এলাকার কোন কৃষক কোন সবজিতে অধিক লাভবান হয়েছে, কোন ব্যক্তি হাস বা মুরগি পালনের সাবলম্বী হয়েছে, আবার কোন ব্যক্তি অসহায় অবস্থায় আছে সে সব নিউজই হাসান পারভেজের পত্রিকায় ছাপা হয়। এসব ইতিবাচক পত্রিকা পড়তে বেশ ভালই লাগে। তবে দুই মাস অন্তর অন্তর পত্রিকাটি ছাপা হচ্ছে। আমরা অনুরোধ জানাচ্ছি পত্রিকাটি যেন প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার হলেও ছাপা হয়।
কমিউনিটি পত্রিকা আন্ধার মালিকের সম্পাদক হাসান পারভেজ বলেন, আর্থিক সংকটের কারনে প্রতি দুইমাস অন্তর অন্তর এ পত্রিকাটি বের করছি। তবে একটি প্রিন্টার এবং কম্পিউটার সহ সরকারী সহায়তা পেলে সাপ্তাহিক হিসেবে পত্রিকাটি বের করার ইচ্ছা রয়েছে আমার।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, হাসান পারভেজের পত্রিকার প্রচার সংখ্যা বাড়াতে সমাজের বিত্ত্ববানদের সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। পাশাপাশি তার দাবিগুলো উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :