ঈদকে সামনে রেখে দীর্ঘ যানজটে নাকাল যাত্রী ও পরিবহন চালকরা


আজকালের কণ্ঠ প্রকাশের সময় : জুন ১৩, ২০২৪, ৫:৩৫ অপরাহ্ন /
ঈদকে সামনে রেখে দীর্ঘ যানজটে নাকাল যাত্রী ও পরিবহন চালকরা

শ্যামপুর, ঢাকা প্রতিনিধি : ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট দীর্ঘ যানজটে নাকাল হয়ে পড়েছেন যাত্রী ও বিভিন্ন পরিবহন চালকেরা। রাজধানীর শ্যামপুর, জুরাইন, পেস্তগোলা, গুলিস্তান, হানিফ ফ্লাইওভারসহ আশপাশাশের এলাকা জুড়ে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় প্রতিটি সড়কে যানবাহনের দীর্ঘ লাইনে থাকা যাত্রী ও চালকদের নাভিশ্বাস উঠেছে। গুলিস্তান হানিফ ফ্লাইওভার ও নিচের সড়ক থেকে শুরু হওয়া যানজটের দীর্ঘ লাইন পেস্তগোলা ব্রীজ পর্যন্ত এসেছে বলে মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।

এদিকে দীর্ঘ এ যানজট নিরসনের জন্য ওয়ারী ট্রাফিক বিভাগ পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ফুতফাত উচ্ছেদ অভিযান করছেন, সড়কে নানা ও অনিয়মের জন্য নিয়ন্ত্রণহীন যানজটের কবলে পড়ে কর্মস্থলে যাওয়া মানুষ ও সাধারণ যাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে। তবে এ বিরক্তিকর যানজট নিরসনে ট্রাফিক বিভাগ অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, রাজধানীর মতিঝিল থেকে শুরু হয়ে গুলিস্তান, থেকে যাত্রাবাড়ী—সায়েদাবাদ এলাকার রাস্তার দু’পাশেই থেকেই ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও শ্যামপুর থানাধীন জুরাইন রেল গেইট সংলগ্ন মহাসড়কের দুই পাশে নারায়ণগঞ্জ ও কেরানীগঞ্জ থেকে আসা সিএনজি ও অন্যান্য বিভিন্ন পরিবহন পার্কিং করে রাখায় যানজট আরও দীর্ঘ হয়েছে। এদিকে প্রতিদিনের মতো সড়কের দু’পাশের এলাকায় প্রাইভেটকার ও সিএনজির দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। মূল সড়কে যানজট থাকায় অনেকে অলিগলির রাস্তায় প্রাইভেটকার ও সিএনজি নিয়ে ঢুকে পড়েছেন বলে সেখানেও দেখা দিয়েছে যানবাহনের লম্বা লাইন।

যানজটে আটকে থাকা জুরাইন এলাকার বসিন্দা মো:নান্নু বলেন, জুরাইন থেকে রাইদা নামের যাত্রীবাহী বাসে উঠে দীর্ঘ যানজটের কারণে তিন থেকে চার ঘন্টা সড়কে আটকে আছি। তবে সকাল থেকে প্রতিটি রাস্তায় অসহনীয় যানজট শুরু হয়েছে। এতে করে দূর দূরান্ত থেকে আসা অফিসগামী যাত্রীদের নাভিশ্বাস উঠেছে।

যানজটের বিষয় খোঁজ নিয়ে জানাযায় দোলাইখালে মেইন সড়কে বসছে কোরবানির গরুর বাজার, ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক যাত্রাবাড়ী থানাধীন শনির আখড়া মেইন সড়কে গরুর হাট বসানোর জন্য এ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট গুলোতে দীর্ঘ যানজট দেখা দিয়েছে।

শেখ ওমর ফারুক পেস্তগোলার এক যাত্রী যুগান্তরকে বলেন, ঢাকা শহরের সকল রাস্তা কাটার কারনে বেশি যানজট লেগেই থাকে।

যানজটের বিষয়ে শ্যামপুরের বাসিন্দা প্রাইভেট কার চালক মোখলেস বলেন, জুরাইনে সড়কের দু’পাশে অবৈধ নানা স্থাপনা, অন্য দিকে নিষিদ্ধ জেলার সিএনজি পার্কিং করে রাখা সব মিলিয়ে শ্যামপুরে সব সময় যানজট লেগেই থাকে।

এ বিষয়ে জুরাইনের ট্রাফিক পুলিশ টিআই মো:ইসমাইল বলেন, ঈদকে সামনে রেখে সকাল থেকে রাস্তায় অন্যান্য দিনের তুলনায় গাড়ির চাপ বেশি হয়েছে । পাশাপাশি শ্যামপুরের দিকে সকল ফিডার রোডের কাজ করার কারনে ভিতরের রাস্তায় গাড়ি চলাচল করতে না পারায় এলাকায় যানজট একটু বেশি। এদিকে যানজটের কারণে অনেকেই সকাল থেকে কর্মস্থলে বের হয়েছেন বলে জন্য রাস্তায় চাপও বেড়েছে।

এ বিষয়ে ডিসি ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগ আশরাফ ইমাম যুগান্তরকে বলেন, কোরবানির গরু রাস্তায় রাখতে না দেওয়া, যথাস্থানে গরু আনলোড করা, এবং ভারী যানবাহনসমূহকে দিনের বেলায় শহরে প্রবেশ না করতে দেয়ার কারণে কোরবানির হাটের দরুন যানজট বৃদ্ধি পায়নি। তবে ঈদ উপলক্ষে ঘর্মুখী মানুষের যাত্রার কারণে এবং যানবাহনের আধিকার কারণের পাশাপাশি সাপ্তাহিক শেষ কর্ম দিবস হওয়ায় স্বাভাবিক নিয়মেই যানজট বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া হানিফ ফ্লাইওভারের ধারণ ক্ষমতার বেশি গাড়ি চলাচল করায় এবং হানিফ ফ্লাইওভারের নিচের অনেকাংশ হানিফ ফ্লাইওভারের পিলার দ্বারা দখল থাকায় মাঝে মাঝেই যানজট সৃষ্টি হয়ে থাকে। ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগের কর্মকর্তাগণ মধ্যরাত পর্যন্ত যানজট নিয়ন্ত্রণে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।