শিশু হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত ২ আসামির বসত ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা


আজকালের কণ্ঠ প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ১৮, ২০২৫, ২:০২ অপরাহ্ন /
শিশু হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত ২ আসামির বসত ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা

গৌরনদী প্রতিনিধি,এস,মামুন : বরিশালের গৌরনদীতে শিশু সাফওয়ান শিকদার (৫) হত্যা মামলার গ্রেফতারকৃত ২ আসামির বসত ঘর (দালান) আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। শিশু সাফওয়ানের জানাজায় অংশ গ্রহনকারীরা শিশু হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে জানাজার পূর্বে উপজেলার শরিকল ইউনিয়নের মধ্য হোসনাবাদ গ্রামের আসামি ইউপির সদস্য মোজাম্মেল হক চৌধুরী ও জানাজার পরে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে প্রধান আসামি রোমান চৌধুরীর বসত ঘরে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেয়।

এতে ওই ২ আসামির বসত ঘর (দালানের) মালামাল সম্পূণ পুড়ে গেছে ও দালানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ অগ্নিকান্ডে ২ আসামির অর্ধকোটি টাকার সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে স্থানীয়রা ধারনা করছেন।
পুশিল ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে শুক্রবার দুপুরে শিশু সাফওয়ান শিকদারের (৫) লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।

সাফওয়ানের লাশ দুপুর ২ টার দিাকে মধ্য হোসনাবাদ গ্রামের বাড়িতে পৌছলে স্বজনদের কান্নায় আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠে। বাদআছর শিশু সাফওযানের নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় অংশ গ্রহনকারীরা বিক্ষোভ মিছিল করে জানাজার পূর্বে শিশু সাফওয়ান হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামি শরিকল ইউপির সদস্য মোজাম্মেল হক চৌধুরী ও জানাজার পরে প্রধান আসামি রোমান চৌধুরীর বসত ঘরে অগ্নিসংযোগ করে।

খবর পেয়ে গৌরনদী ফায়ার ষ্টেশনের গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌছলে বিক্ষুব্ধরা ফায়ার কর্মীদের আগুন নেভাতে বাঁধা দেয়। খবর পেয়ে গৌরনদী উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা আবু আব্দুল্লাহ খান, এসিল্যান্ড মো. রাজীব হোসেন, গৌরনদী সার্কেলের অতিক্তিত পুলিশ সুপাার শারমিন সুলতানা রাখী, ওসি মো. ইউনুস মিয়াসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জানাজায় অংম গ্রহনকারীদের অগ্নিসংযোগের ফলে আসামি ইউপির সদস্য মোজাম্মেল হক চৌধুরী ও প্রধান আসামি রোমান চৌধুরীর বসত ঘর (দালান) মালামাল সম্পূর্ণ পুড়ে যায় ও দালানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে ওই ২ আসামির অর্ধ কোটি টাকার সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে স্থানীয়রা ধারনা করছেন।

গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইউনুস মিয়া অগ্নিসংযোগের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, জানাজায় অংশ গ্রহনকারীরা উত্তেজিত হয়ে শিশু হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মামলার আসামি আসামি ইউপির সদস্য মোজাম্মেল হক চৌধুরী ও প্রধান আসামি রোমান চৌধুরীর বসত ঘরে পুড়িয়ে দিয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। নিহতের বাবা উপজেলার মধ্য হোসনাবাদ গ্রামের মো. ইমরান শিকদার বাদি হয়ে ৬ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৯/১০ জনকে আসামি করে শুক্রবার দুপুর গৌরনদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে।

মামলার এজাহারভূক্ত আসামি একই বাড়ির রোমান চৌধুরী, তার স্ত্রী আখি বেগম, বোন রাবিনা বেগম ওরফে লাবিনা বেগম ও শরিকল ইউপির সদস্য মোজাম্মেল হক চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত ২ নারীসহ ওই ৪ আসামিকে শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে বরিশাল সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালতের বিচারক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

ওই চার আসামিাকে জিজ্হাসাবাদের জন্য আদালতে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গৌরনদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাহাবুব আলম। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেফতারের জোর প্রচেষ্টা চলছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত আর কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন ওসি ইউনুস মিয়া।