বাকেরগঞ্জে অবৈধ ইটভাটার মধ্যে আশ্রয়নের ৪২ ঘর, ধোঁয়ায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে বাসিন্দারা


আজকালের কণ্ঠ প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ৭, ২০২৫, ৫:৪৬ অপরাহ্ন /
বাকেরগঞ্জে অবৈধ ইটভাটার মধ্যে আশ্রয়নের ৪২ ঘর, ধোঁয়ায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে বাসিন্দারা

খান মেহেদী : বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের রঘুনাথদ্দি গ্রামের জনতার হাটের পূর্ব পাশে ও বাহেরচরে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসরত শিশু-বৃদ্ধসহ প্রায় সকলেই ভুগছেন শ্বাসকষ্টে। জমিসহ ঘর পেয়ে আশ্রয়হীন এসব মানুষ নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখলেও অবৈধ ড্রাম চিমনি ইট ভাটার ধুলোবালি ও ধোঁয়ার কারণে সেই স্বপ্ন গুঁড়েবালি হতে চলেছে।

একদিকে ধোঁয়ায় অতিষ্ঠ জীবন, অন্যদিকে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বাড়ির আঙিনায় বিভিন্ন ফলজ গাছ বপন করলেও তাতে ফল ধরে না। স্থায়ী বাসিন্দাসহ সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের জীবন এভাবেই অতিষ্ঠ করে তুলেছে অনুমোদনবিহীন মেসার্স এম. এম. ডব-ব্রিকস, মেসার্স টু স্টার ব্রিকসসহ প্রায় দশটি ইটভাটা। ফরিদপুর ইউনিয়নের এ সকল অবৈধ ইটভাটা এলাকার আশপাশে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বছরের পর বছর ধরে অবৈধ ইটভাটা রঘুনাথদ্দি গ্রামের ফসলি মাঠের মধ্যবর্তী স্থান ও বসতবাড়ির সন্নিকটে ইটভাটা নির্মাণ করে ইট তৈরি করে আসছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। মানুষের স্বাস্থ্যসহ পরিবেশ ঐ এলাকায় এখন চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। এ সকল ইটভাটার বৈধ কোন কাগজপত্র নেই। এমনকি তারা প্রতিবছর সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। অবৈধ ইটভাটা গুলোতে ড্রাম চিমনির মাধ্যমে ধোঁয়া নির্গত হয় বলে ধোঁয়ায় স্বাস্থ্যে ঝুঁকিতে রয়েছে হাজার হাজার মানুষ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জনকণ্ঠকে বলেন, ইটভাটার কারণে বসতবাড়ির নারকেল, লেবু, বারোমাসি মরিচসহ কোনো ফসলই হচ্ছে না। ধোঁয়ায় শিশু-বৃদ্ধ সবাই শ্বাসকষ্টে ভোগেন।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা বলেন, সরকার জমিসহ ঘর দিয়ে আমাদের বলেছেন গাছ লাগিয়ে তরকারি উৎপাদন করতে। কিন্তু এই ইটভাটার কারণে কোনো গাছে ফসল হয় না। বাচ্চাদের ১২ মাস শ্বাসকষ্ট, কাশি, গলাব্যথাসহ বিভিন্ন রোগ লেগেই থাকে। ইটভাটার ধুলোবালি ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে ঘরে থাকা কাপড় চোপড় ও আসবাবপত্র ধুলোবালিতে ছেয়ে যায়। কিছু বললেই কয়, তোমরা হইলা দুই দিনের বাসিন্দা। সরকার এখন তোমাদের দিয়েছে, দুই দিন পর উঠায়া দিলে কী করবা? আমরা কী প্রতিবাদ করার সাহস রাখি! যারা এখানে ইট ভাটার মালিক সবাই প্রভাবশালী।

বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কাজী সাইফুদ্দিন বলেন, লাইসেন্সবিহীন কোনো ভাটা পরিচালনা করার সুযোগ নেই। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করবো।

বাকেরগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আফরোজ বলেন, খোঁজখবর নিয়ে লাইসেন্সবিহীন ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।