প্রবন্ধ -ঝড়ে পড়া কন্যা লেখক-হুমায়রা জান্নাত লিমা


আজকালের কণ্ঠ প্রকাশের সময় : অক্টোবর ১, ২০২৪, ২:২৬ অপরাহ্ন /
প্রবন্ধ -ঝড়ে পড়া কন্যা লেখক-হুমায়রা জান্নাত লিমা

মোঃ জয়নাল আবেদীন আলীকদম বান্দরবান : প্রবন্ধ -ঝড়ে পড়া কন্যা লেখক-হুমায়রা জান্নাত লিমা
“”””” হাসবে, খেলবে,শিখবে আমার শিশু””””
“”শতো বাঁধা নিমিষেই ভেঙে ভয় পাবে না কোনকিছু “”””

শিক্ষা একজন শিশুর অধিকার। আর সে শিক্ষার আলো সবটা গ্রহণ করা তার মৌলিক অধিকার। সবাই সে আলো পেলেও আমার কন্যা শিশু যেন বঞ্চিত হয় কিছু অসচেতন অভিভাবক, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগা আমার কন্যা,সমাজের অশিক্ষিত মানুষের প্ররোচনায়। একটু বড় হলেই যেন হায়েনারা উঁকি দিতে চায় আমার কন্যার আলোকিত পথটা।শুধু তাই নয়,দারিদ্রতা ও আমার এই কন্যা শিশুকে ঝড়ে পড়তে বাধ্য করে অবশেষে

বাস্তব অভিজ্ঞতা”” একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে আমি মনে করি “প্রতিটি শিশুই আমাদের প্রাণ”। বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের অভিভাবক অল্পশিক্ষিত হওয়ায় তাদের কাছে একটা রেওয়াজ হয়ে গেছে যে -কন্যাশিশুর বেশি পড়াশোনার প্রয়োজন নেই।একটু বড় হলেই বয়স দেখেনা,।প্রথম বয়ঃসন্ধিকাল শুরু হলেই বন্ধ করে দেওয়া হয় তার পড়াশোনা।যদিওবা বর্তমানে তা অনেকাংশে তা কমে এসেছে তবুও আমি ব্যক্তিগতভাবে আশেপাশে যা দেখে আসছি তা-ই তুলে ধরছি। এই পিছনের গল্পটা সহজ ছিলোনা।হোম ভিজিটের মাধ্যমে আমরা প্রতিটি পরিবারের মাঝে পৌছে দিয়েছি” শিশু মানেই শিক্ষিত হতে হবে”কন্যা বা পুত্র কে আলাদ চোখে না দেখার আহবান জানাই।।

মূল কারণ- দারিদ্রতা,অভিভাবকদের অসচেতনতা, শিশুর যত্নের ঘাটতি,মেয়ে শিশুকে শিক্ষা না দেওয়ার প্রবণতা,বাল্যবিবাহ,শিশুশ্রম আরও নানাবিধ কারণ থাকলেও এগুলোই প্রধান কারণ

বাল্যবিবাহঃবয়স্ক প্রবাসী চায়, গ্রামের ফুটফুটে একটা কিশোরী যাকে কোন ছেলে এখনো নজরে দিতে পারেনি।এই সমস্যাটা আমাদের গ্রামাঞ্চলের প্রতিটি শিরায় শিরায় গেঁথে আছে। এই লোভ প্রতিটি অভিভাবকে লোভী করে তুলে।যার কারণে বাল্যবিবাহের মতো প্রথাটি এখনো সমাজে বিরাজমান হয়ে আছে।স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে ঘুষ খাইয়ে বয়স বাড়িয়ে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে ১৩/১৪ বছরের কিশোরীকে। এই ২০২৪সালে এসেও এমন ঘটনা অহরহ।

কন্যাশিশুকে বাড়ির কাজ করানোঃ গ্রামাঞ্চলে বিশেষ করে অসচেতন অভিভাবকরা কন্যা সন্তানকে দিয়ে একটু বড় হলেই সমস্ত কাজ রান্না বান্না করানো,কাপড় ধোঁয়া, পানি আনা সহ সব কাজ। আমি যখন জিগ্যেস করলাম তখন উত্তরে বললেন শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে যেন কথা শুনতে না হয় তাই তাদের শেখানোর জন্যই এমন চর্চা।

প্রতিকারের উপায়ঃ বর্তমানে প্রায় ৯০%ঝড়ে পড়া রোধ করা হয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। আমরা শিক্ষক হিসেবে প্রতিটি এলাকায় শিশুজরিপ করে এই সমস্যাটা সমাধান করার চেষ্টা করি নিয়মিত খোঁজখবর নেওয়ার জন্য হোমভিজিট করি,এটা প্রাথমিক সমাধান।।তবে এতো বড় সমস্যা আমাদের শিক্ষকের একার পক্ষে সম্ভব নয় সমাধান করার।প্রশাসনের এ ব্যাপারে কঠোর হতে হবে অভিভাবকদের সচেতনমূলক বার্তা প্রেরণ করতে হবে।সমাজের শিক্ষিত মানুষদের ও এগিয়ে আসতে হবে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় হাসবে আমার কন্যা,ভোগ করবে সকল অধিকার।

উপসংহারঃ””কন্যা সন্তান রুপে প্রতিটি রাজকন্যাই শক্তি ও দৃঢ় আস্থার প্রতীক,যা সমগ্র সমাজকে আলোকিত করে”” তাই আসুন এই আলোকে আমরা সবাই মিলে অন্ধকার থেকে আলোতে আনি।যত্নে থাকুক তারা, নিজেদের পরিচয় নিজেরাই তৈরি করুক।শিক্ষার আলোয় আলোয় উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো জ্বলে উঠুক নিজ শক্তিতে।