র‌্যাব-পুলিশ পরিচয়ে স্বর্ণালঙ্কার লুট, গ্রেফতার ৯

নিউজটি শেয়ার করুন

আজকালের কন্ঠ ডেস্ক : ঢাকার কেরানীগঞ্জে র‌্যাব-পুলিশ পরিচয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ৩৪ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ২২ ভরি রূপা, ৮০ হাজার টাকা ডাকাতির ঘটনায় ৯ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) নিজ কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান।

গ্রেফতার ডাকাতরা হলেন- বাদল মুন্সি ওরফে সার্জেন্ট বাদল (৪৫), শহিদুল শেখ ওরফে র‌্যাব শহিদ (৪০), অলিউর রহমান ওরফে ক্যাপ্টেন ওলি (৪২), সাঈদ মনির আল মাহমুদ (৩৭), সবুজ খান (৫২), ইব্রাহিম (৩৬), লাবু শরীফ (৪৮), রুবেল (২৭), মোশাররফ হোসেন (৩৯)।

তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। এসময় ডাকাতদের কাছ থেকে লুন্ঠিত ৭০ হাজার টাকা, ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস, একটি প্রাইভেটকার, খেলনা পিস্তল, লেজার লাইট, হ্যান্ডকাপ, র‌্যাবের তিনটি কোটি পোশাক উদ্ধার করা হয়েছে।

তার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। কিন্তু গুলি করার ভয় দেখালে চুপ হয়ে যায় জড়ো হওয়া লোকজন। সেদিন ৩৪ ভরি স্বর্ণ ও ২২ ভরি রুপা ছিল। সঙ্গে নগদ ৮০ হাজার টাকা ছাড়াও চেক বই ছিল। এগুলো সব লুট করে নিয়ে যায় এ ডাকাতচক্র।

তিনি জানান, কেরানীগঞ্জের জৈনপুর এলাকায় সুনীল মণ্ডলের জুয়েলারির দোকান। অন্যান্য দিনের মতো ৪ সেপ্টেম্বর, রাতে দোকান বন্ধ করে স্বর্ণ ও রুপার গহণা এবং নগদ টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। দোকান থেকে তার বাড়ির দূরত্ব মাত্র ১০০ মিটার। বাড়িতে ঢোকার ঠিক আগ মুহূর্তে একটি মাইক্রোবাস থেকে কয়েকজন নেমে র‌্যাব পরিচয় দিয়ে তাকে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করে।

এ ঘটনায় ভিকটিম সুনীল মন্ডল বাদী হয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা করেন। মামলার পর তদন্তে নেমে নানা কৌশল ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকার আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৯ ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গ্রেফতারকৃতরা পেশাদার ডাকাত। এরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে একাধিক ডাকাতি করেছে। চক্রটি মূলত ঢাকার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকার তাঁতিবাজারে আসা স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে ডাকাতি করে।

এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবীর বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস চিহ্ন করে মামলাটির রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হয়। র‌্যাব-পুলিশ পরিচয় দেয়া সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রটি ঢাকার আশেপাশের নির্জন এলাকা বিশেষ করে কেরানীগঞ্জ এলাকা বেছে নিচ্ছে। কারণ ওইসব এলাকায় সিসি ক্যামেরার যথেষ্ঠ অভাব আছে, পুলিশের নজরদারিও কম। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যেও সচেতনতার ঘাটতি আছে।

ব্যবসায়ীদের স্বর্ণ ও নগদ টাকা ডাকাতি করার জন্য সংঘবদ্ধ এই ডাকাতচক্র তাঁতিবাজার কেন্দ্রিক একটি বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। নির্জন এলাকার সড়কে নেই লাইট, সিসি ক্যামেরা, এমনকি রাতের বেলায় থাকে না জনসাধারণের চলাচলও। আর এই সুযোগটিই কাজে লাগায় এ ডাকাতচক্র।

যেমন সুনীল মণ্ডলকে যখন র‌্যাব তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে, তখন তার স্ত্রী কথিত র‌্যাব সদস্যদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে বাধা দেয়। কিন্তু উপস্থিত লোকজন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছে। তাদের মধ্যে একটা লোকও কথিত র‌্যাব সদস্যদের চ্যালেঞ্জ করেনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমীনুল ইসলাম, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অলক কুমার দে।

 

শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »