সম্পাদকীয় : নানা পদক্ষেপ নেওয়া সত্তে¡ও এবারের ঈদের ছুটিতেও সড়কে ঝরেছে বহু প্রাণ; আহত হয়েছেন অনেকে। জানা যায়, ঈদের ছুটিতে তিন দিনে সারা দেশের সড়কে ৬৭ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন।
বস্তুত সড়কগুলো মৃত্যুফাঁদে পরিণত হওয়ার প্রধান কারণ চালকদের বেপরোয়া মনোভাব। কাজেই দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদের মূল্যবোধের পরিবর্তনেও নিতে হবে জোরালো পদক্ষেপ। পরিবহণকর্মীদের দক্ষতা ও যোগ্যতা বাড়ানোর জন্য বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করা দরকার। তাদের জীবনমানের উন্নয়নেও নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।
সড়কে যাতে ত্র“টিপূর্ণ যানবাহন চলাচল করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে সড়কের ত্র“টি দূর করার জন্যও নিতে হবে পদক্ষেপ। লাইসেন্স প্রদানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমবে। প্রশ্ন হলো, কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে কতটা গুরুত্ব দিয়ে দেখছে?
দেশে মোটরসাইকেলের সংখ্যা বাড়ছে। অদক্ষ মোটরসাইকেল চালকদের কারণে সড়কে ঝুঁকি বাড়ছে। লক্ষ করা যায়, হেলমেটসহ নিরাপত্তা সরঞ্জাম ব্যবহার না করেই অনেকে মোটরসাইকেল চালান। মোটরসাইকেল চালকদের আইন মেনে চলতে বাধ্য করতে প্রয়োজনে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে।
ঈদের আগের দিন সকালে কুমিল্লায় এক নারী ভ্যানগাড়ি থেকে কাপড় কেনার সময় পেছন থেকে আসা একটি প্রাইভেট কার তাকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে ঈদের দিন নাতির সিএনজিচালিত অটোরিকশার নিচে চাপা পড়ে এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছেন। তিনি ওই অটোরিকশাচালকেরই নানি। এছাড়া ইঞ্জিনচালিত ছোট ছোট যানবাহনের কারণে সারা দেশে প্রতিদিনই হতাহতের ঘটনা ঘটছে।
এসব ঘটনা রোধে কর্তৃপক্ষকে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়টি বর্তমানে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। কাজেই দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সরকারিভাবে আরও জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। এক্ষেত্রে কাক্সিক্ষত ফল পেতে হলে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা দরকার। সড়ক পরিবহণ আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন ছাড়া দুর্ঘটনা কাক্সিক্ষত মাত্রায় কমবে বলে মনে হয় না। কাজেই এ আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।